রমজান মাস গোটা মুসলিম জাতির জন্য একটি পবিত্র ও বরকতময় মাস।
এ মাসে মুসলমানরা সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের বিশেষ সুযোগ লাভ করে।
প্রতিবছর রমজান শুরুর সময় চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। ২০২৫ সালে রমজান
মাস শুরু হবে ফেব্রুয়ারি মাসে। মধ্যপ্রাচ্যের জ্যোতির্বিদ্যা বিশেষজ্ঞরা পূর্বাভাস
দিয়েছেন যে ২৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা গেলে ১ মার্চ (শনিবার) থেকে
রোজা শুরু হবে। তবে চাঁদ দেখা না গেলে রমজানের তারিখ একদিন পিছিয়ে যেতে পারে।
২০২৫ সালের রমজান কত তারিখ?
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরব,
সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কয়েকটি দেশে ২৮ ফেব্রুয়ারি চাঁদ দেখা যেতে পারে। যদি চাঁদ
দেখা যায় তাহলে ১ মার্চ শনিবার থেকে রমজান মাস শুরু হবে।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশে
সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পর রমজান মাস শুরু হয়। সে হিসেবে রমজানের চাঁদ দেখা গেলে
বাংলাদেশে ২ মার্চ (রবিবার) থেকে প্রথম রোজা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রমজানের তারিখ পরিবর্তনের কারণ কি?
রমজানের নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ হয় চন্দ্র বর্ষপঞ্জি অনুসারে।
ইসলামী ক্যালেন্ডারে প্রতিটি মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। সাধারণত একটি আরবি বছর
৩৫৪ বা ৩৫৫ দিনের হয় যা গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির (৩৬৫/৩৬৬ দিন) চেয়ে ১০-১২ দিন কম।
ফলে প্রতি বছর ইংরেজি ক্যালেন্ডারে রমজান মাস আগের বছরের তুলনায় ১০-১২ দিন আগে শুরু
হয়।
উদাহরণস্বরূপ,
২০২৩ সালে রমজান শুরু হয়েছিল ২৩ মার্চ। ২০২৪ সালে রমজান শুরু
হয়েছিল ১১ মার্চ। ২০২৫ সালে এটি ১ মার্চ (সম্ভাব্য) শুরু হতে পারে
পড়তে পারেনঃ
- আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ, অর্থ ও ফজিলত
- সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত
- নামাজের জন্য ১০ টি সূরার বাংলা উচ্চারণ
চাঁদ দেখার প্রক্রিয়া
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রমজান শুরুর পদ্ধতিতে পার্থক্য রয়েছে।
চাঁদ দেখা কমিটি: সৌদি আরব, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ
বেশিরভাগ মুসলিম দেশ খালি চোখে চাঁদ দেখা অথবা দূরবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে চাঁদ দেখার
উপর নির্ভর করে রমজান মাসের শুরুর তারিখ ঘোষণা করে।
জ্যোতির্বিদ্যা গণনা: অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, তুরস্কসহ
কিছু দেশ জ্যোতির্বিদ্যা হিসাবের মাধ্যমে আগেই রমজান শুরুর তারিখ ঘোষণা করে।
এ কারণে কখনও কখনও বিভিন্ন দেশে রমজানের শুরুতে এক-দুই দিনের
পার্থক্য দেখা যায়।
রমজানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
রমজান মাস মুসলিম উম্মাহর জন্য আত্মশুদ্ধি, সংযম ও ইবাদতের
বিশেষ সুযোগ করে দেয়। রমজানের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর ঐ রাতেই তারাবির নামাজ আদায় করা
হয়। সূর্যোদয়ের আগে সেহরি করা হয় এবং সূর্যাস্তের পর ইফতারের মাধ্যমে রোজা ভাঙা হয়।
এ মাসে মুসলমানরা দান-সদকা বাড়িয়ে দেন এবং যাকাত প্রদান করেন। রমজানের শেষ দশ রাতে
লাইলাতুল কদর পালিত হয় যা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও বেশি ফজিলতপূর্ণ।
২০২৫ সালের রমজানের প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত?
রমজানের প্রস্তুতি আগে থেকেই নেওয়া ভালো যাতে এ মাসটি আত্মশুদ্ধি
ও ইবাদতের মাধ্যমে কাটানো যায়। এ মাস শুরু হ ওয়ার আগেই আপনি যেসব প্রস্তুতি নিতে পারেন:
মানসিক প্রস্তুতি: রমজানের ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে
জানা এবং আত্মশুদ্ধির মানসিকতা তৈরি করা।
খাদ্য পরিকল্পনা: সেহরি ও ইফতারের জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার প্রস্তুত
রাখা।
ইবাদতের পরিকল্পনা: নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত, নামাজ ও জিকির করার অভ্যাস গড়ে তোলা।
দান-সদকা: অভাবী ও দুস্থদের সাহায্য করার পরিকল্পনা করা।
২০২৫ সালে পবিত্র রমজান মাসের প্রথম রোজা ১ মার্চ (শনিবার) অথবা ২ মার্চ (রবিবার) শুরু হতে পারে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করবে। মুসলমানদের জন্য এটি আত্মশুদ্ধি, সংযম ও ইবাদতের মাস। তাই রমজানের আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে এ মাসে প্রতিটি দিন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মুসলিম উম্মাহকে ইবাদতের মধ্যেদিয়ে অতিবাহিত করা উচিত।
রিলেটেড পোস্টসঃ