Type Here to Get Search Results !

৭ দিনেই মেদ ভুঁড়ি গায়েব! পেট হবে ফ্ল্যাট, অব্যর্থ টিপস!

৭ দিনে পেটের মেদ কমানোর উপায়,৩ দিনে পেটের মেদ কমানোর উপায়,মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায়

আপনি কি পেটের মেদভুঁড়ি নিয়ে চিন্তিত? আপনি কি মেদভুঁড়ি থেকে মুক্তি পেতে চান? পৃথিবীর অনেক মানুষ তাদের মেদভুঁড়ি নিয়ে সমস্যায় আছে। মূলত অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও অলস জীবনযাপন পেটে মেদ জমার প্রধান কারণ।

পেটে অতিরিক্ত মেদ শুধু চলাফেরায় অসুবিধা সৃষ্টি করে না বরং দৈহিক সৌন্দর্যও নষ্ট করে। মেদভুঁড়ির কারণে সুন্দর পোশাক পরলেও তা ঠিকমতো মানায় না। সবচেয়ে বড় কথা হল পেটে মেদ জমলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের সমস্যা সহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়। এ কারণেই অনেকেই চিন্তিত থাকেন যে কিভাবে এই অতিরিক্ত মেদ ঝরানো সম্ভব?

আজকের এই আর্টিকেলে আমি ৭ দিনে পেটের মেদ কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করব। আপনি মেদভুঁড়ি কমাতে চাইলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং সহজ ও প্রাকৃতিক উপায়ে কীভাবে ভুঁড়ি কমানো যায় তা জানুন!

৭ দিনে পেটের মেদ কমানোর উপায়

পেটের মেদ কমানোর অনেক উপায় আছে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য ও অব্যর্থ কিছু উপায় তুলে ধরা হল।

১। সকালে লেবু ও মধু মিশ্রিত পানি পান করুনঃ

সকালে খালি পেটে লেবু, মধু ও পানি পান করলে কম ক্ষুধা লাগে। তাছাড়া লেবু ও মধু মিশ্রিত পানি পান করার কারণে খাওয়ার চাহিদাও কমে যায়। ফলে ক্যালরি কম খাওয়া লাগে। ক‍্যালরি কম খাওয়ার কারণে ধীরে ধীরে পেটের মেদ ও ওজন কমতে থাকে।

২। রাতে টক দই ও কালোজিরার মিশ্রণ পান করুনঃ

পেটের মেদ কমানোর জন্য টক দই ও কালোজিরার মিশ্রণ খুব কার্যকারী পানীয়। এটাকে ম্যাজিক পানীয়ও বলা হয়। ২৫০ গ্রাম পানিতে ১০০ গ্রাম টক দই  ১ চা চামচ কালোজিরার গুড়া দিয়ে ম্যাজিক পানীয় তৈরি করে নিন। এরপর রাতে ঘুমানোর আগে সেই ম্যাজিক পানীয় পান করুন। নিয়মিত এক মাস ম্যাজিক পানীয় পান করলে পেটের মেদ কমবেই ইনশাল্লাহ।

৩। প্রচুর ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খানঃ

ফাইবার পেটের মধ্যে অনেকক্ষণ থাকে যার ফলে ঘন ঘন ক্ষুধা লাগে না। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে মনে হয় পেট সবসময় ভরে আছে। সাধারণত সবজি জাতীয় খাবারে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে। এছাড়া কলা, মসুর ডাল, আপেল, নাশপাতি, ব্রোকলি ও বাদামের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে। তাই পেটের মেদ কমাতে এই উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলো খান।

৪। উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খানঃ

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। বাদাম, দুধ ও দুধজাতীয় খাবার, মাছ, ডিম, মাংস, ডাল ইত্যাদি হল উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। পেটের চর্বি গলানোর জন্য এই উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো খান।

৫। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খানঃ

পেটের মেদ কমাতে আয়রন জাতীয় খাবারের জুড়ি নেই। কুমড়ো বীজ, ডালটার্কি মুরগি, ফুলকপি, শিম, মটরশুঁটি ও পালংশাক জাতীয় সবজিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। তাই পেটের মেদ কমাতে এই উচ্চ আয়রন সমৃদ্ধ খাবারগুলো নিয়মিত খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।

৬। পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ

পানি পরিবশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পানীর অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া একদিনও বাঁচা যায় না। কিন্তু পানি যে ওজন ও পেটের মেদ কমায় এটা হয়তো অনেকেই জানে না। তাই পেটের মেদ কমাতে দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করুন। পর্যাপ্ত পানি পান করে বছরে ১৭,৪০০ অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন করা সম্ভব।

পড়তে পারেনঃ

৭। দুধ ও টক দই খানঃ

দ্রুত শরীরের মেদ কমাতে দুধ ও টক দই অত্যন্ত উপকারী। পেটের মেদ কমাতে দুধ ও টক দই বেশি খেতে হবে। এতে যে ক্যালসিয়াম থাকে তা ফ্যাট বার্ন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে দুধজাতীয় অন্য খাবার চিনি ছাড়া খাবেন।

৮। গ্রিন টি পান করুনঃ

গ্রিন টি মানব শরীরের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টিতে ভরপুর যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। পেটের মেদ কমানোর ক্ষেত্রে গ্রিন টি অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে তলপেটের চর্বি কমানোর জন্য গ্রিন টি অনন্য। তাই সকালে চা ও কফির বদলে গ্রিন টি পান করুন।

৯। সাদাভাত কমিয়ে দিয়ে বেশি বেশি ফল ও সবজি খানঃ

ফল ও সবজিতে প্রচুর পরিমাণে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ও ফাইবার থাকে যা কোলেস্টেরল ও পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। খাবারের আঁশ চর্বিকণাকে বেঁধে ফেলে এবং মলমূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে।তাছাড়া ফল ও সবজিতে আঁশজাতীয় উপাদান বেশি থাকার কারণে ক্ষুধার অনুভূতি হ্রাস পায়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৪/৫ ধরনের ফল ও সবজি খান।

১০। প্রতিদিন বাদাম ও অলিভ অয়েল খানঃ

পেটের মেদ কমাতে বাদাম ও অলিভ অয়েল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাদাম ও অলিভ অয়েলে আছে প্রয়োজনীয় উপকারী ফ্যাট যা রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে এবং পেটের চর্বি কমায়। তাই প্রতিদিন  খাদ্যতালিকায় কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, কুমড়ার বীজ, শিমের বীজ ও অলিভ অয়েল রাখুন।

১১। প্রচুর পরিমাণে সামুদ্রিক মাছ খানঃ

সামুদ্রিক মাছে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এই অ্যাসিড মেদ বৃদ্ধিতে দায়ী চর্বিকে পোড়াতে এবং শরীরে ভালো চর্বির পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। সামুদ্রিক মাছ থেকে যে ফ্যাট পাওয়া যায় তা পেটের চর্বি কমাতে বিরাট ভূমিকা রাখে।

পেটের মেদ কমানোর অসাধারণ টিপস

১। কার্বোহাইড্রেট বাদ দিন।

২। চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাদ্য এড়িয়ে চলুন।

৩। পর্যাপ্ত ঘুমান।

৪। লাল মাংস বাদ দিয়ে প্রচুর পরিমাণে চর্বিযুক্ত মাছ খান।

৫। ফলের রস পান করা বন্ধ করুন।

৬। খাদ্যতালিকায় আপেল সিডার যোগ করুন।

৭। প্রতিদিন কমপক্ষে আধা ঘন্টা দ্রুত হাঁটুন।

৮। একবারে কোন খাবার বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে খান।

৯। তেল ও চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।

১০। নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিদিন খাবার খান।

১১। অফিসের চেয়ারের সবসময় বসে না থেকে মাঝে মাঝে হাঁটুন।

১২। মোবাইলে কথা বলার সময় বসে কথা না বলে হাটুন এবং কথা বলুন।

১৩। নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখুন।

১৪। প্রতিদিন রাতে খাওয়ার পর কিছু সময় হাঁটুন।

১৫। হাতে তেল নিয়ে প্রতিদিন ৫ মিনিট পেট ম‍্যাসেজ করুন।

পরিশেষে বলা যায়, পেটের বাড়তি মেদ শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই অতিরিক্ত মেদ শরীরে নানা সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই, সময় থাকতে সবাইকে পেটের মেদ কমানোর দিকে মনোযোগী হওয়া উচিত। আপনি যদি আমার এই আর্টিকেলের ৭ দিনে পেটের মেদ কমানোর উপায় গুলো ফলো করেন তাহলে দ্রুতই আপনার পেট ফ্লাট বা স্লিম হয়ে যাবে। তবে, একটি বিষয় মনে রাখবেন পেটের মেদ কমানোর জন্য পরিশ্রমের বিকল্প নেই। পাশাপাশি আপনার খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনেও পরিবর্তন আনতে হবে।

মনে রাখবেন:

করলে নিয়মিত পরিশ্রম জীবনে মেদভুঁড়ি হবে না তার,

করলে অলস জীবনযাপন পাঙ্গাস মাছের মত পেট হবে তার।

রিলেটেড পোস্টসঃ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.