Type Here to Get Search Results !

মেথির অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা যা জানলে চমকে উঠবেন!

মেথির উপকারিতা,মেথি,মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা,পুরুষের জন্য মেথির উপকারিতা,মেথি খাওয়ার নিয়ম,মেথি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

মেথি একটি প্রচন্ড উপকারী মসলা, খাবার ও পথ্য। যুগ যুগ ধরে রান্না, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ও ভেষজ ওষুধে মেথির ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানেও বহু মানুষ চুলের ও মুখের জন্য কিংবা ওজন ও ডায়াবেটিস কমাতে কিংবা শরীরের বিভিন্ন সমস্যার জন্য মেথি ব্যবহার করে। মেথির অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা জানলে যে কেউ চমকে উঠবে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Trigonella foenum graecum. বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেথির বীজ খাওয়া হয়। তবে এর পাতাও খাওয়া যায় এবং অনেক উপকারীও বটে। তাই প্রত্যেকের মেথির উপকারিতা জেনে নিয়মিত মেথি খাওয়া উচিত। আজ আমি এই আর্টিকেলে মেথির উপকারিতা সহ মেথি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। চলুন, মেথির অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই!

মেথির উপকারিতা

মেথির পুষ্টি উপাদান

রান্নাবান্নার স্বাদ বাড়ানোর জন্য মেথি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এতে আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার, আয়রন, কপার, ভিটামিন বি6, ভিটামিন সি ও সামান্য পরিমাণে ভিটামিন এ। মেথির এই উপাদানগুলো মানব শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। মেথির ছোট ছোট বীজ নানান পুষ্টিগুণে ভরা। এটি মানুষের শরীরকে অনেক মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে। এখন জানা যাক মেথি মানুষের শরীরে কি কি উপকার করে বা কোন কোন রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে।

যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে

যৌন শক্তি বৃদ্ধির একটি মহৌষধ হল মেথি। কথাটি কারো মুখের কথা নয় বরং পরীক্ষিত। মেথি যে যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে এটা জানার জন্য ৩০ টি দেশের ২৫ হাজার  পুরুষের উপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়। এই পরীক্ষায় যৌন শক্তিতে দুর্বল পুরুষদের দিনে দুইবার মেথি রস খাওয়ানো হয়। এতে অবাক করা ফলাফল পাওয়া যায়। নিয়মিত কিছুদিন মেথির রস খাওয়ার পর যৌন শক্তিতে দুর্বল পুরুষরা তাদের হারানো যৌনশক্তি ফিরে পায় এবং তাদের দাম্পত্য জীবনের সুখ ফিরে আসে। তাই আপনিও যৌনশক্তিতে দুর্বল হলে নিয়মিত মেথির রস খেতে পারেন। হয়তোবা ঐসব পুরুষদের মত আপনিও আপনার হারানো যৌনশক্তি ফিরে পেতে পারে।

ত্বক উজ্জ্বল করে

মেথি ত্বককে জ্বলজ্বলে করতে বিরাট ভূমিকা পালন করে। কিন্তু ত্বককে উজ্জ্বল করতে শুধুমাত্র মেথি খেলে হবে না। মেথির সাথে অন্যান্য উপাদান যোগ করতে হবে। যেমন: মেথির সাথে দুধ, টকদই, মধু, অলিভ অয়েল, গোলাপজল ও বেসন মিশিয়ে মেথি ব্যবহার করলে নিশ্চিত খুব দ্রুত আপনি জাঁকালো ত্বকের অধিকারী হয়ে যাবেন।

ক্যান্সার থেকে দূরে রাখে

মানব শরীরে ক্যান্সার কোষ জন্ম নিলে পাঁচ/ছয় মাসের পূর্বে বুঝা যায় না কিংবা পূর্ণাঙ্গভাবে ক্যান্সার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত বোঝা যায় না। আর একবার ক্যান্সার সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়লে মৃত্যু ছাড়া কোনো পথ থাকে না। এতে ৯৯% মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু মেথি ভেজানো পানি ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে। নিয়মিত মেথি ভেজানো পানি পান করলে শরীরে ক্যান্সার কোষ জন্ম নিতে পারে না। বিশেষভাবে মেথি স্তন ও কোলন ক্যান্সার কোষ জন্ম নিতে বাধা দেয়। তাই মরণব্যাধি ক্যান্সার থেকে বাঁচতে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস মেথি ভেজানো পানি পান করা উচিত।

কোলেস্টেরল কমায়

শরীরের কোলেস্টেরল কমানোর জন্য মেথি একটি জাদুকরী উপাদান। তাই আপনি আপনার শরীরের কোলেস্টরল কমাতে চাইলে নিয়মিত মেথি চা বা মেথি ভেজানো পানি পান করতে পারেন। এক সপ্তাহ মেথি চা কিংবা মেথি ভেজানো পানি পান করার পর আপনি স্বচক্ষে ফলাফল দেখতে পাবেন যে মেথি কি পরিমাণ কোলেস্টেরল কমাতে পারে।

বুকের দুধ বাড়ায়

মেথি বুকের দুধ বাড়াতে জাদুর মত কাজ করে। মেথি খাওয়ার ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বুকের দুধ বেড়ে যায়। যেসব উপাদান বুকের দুধ বাড়ায় সেসব উপাদান মেথির মধ্যে পর্যাপ্ত বিদ্যমান। মেথিতে আছে ফাইটো এস্টোজেন, ফ্লাভোনয়েড, ভিটামিন ও ডায়োজেনিন যা বুকের দুধ অতি দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। তাই যে সমস্ত মহিলাদের সন্তান জন্মদানের পর বুকের দুধের ঘাটতি দেখা যায় তাদের অবশ্যই মেথি ভেজানো পানি কিংবা মেথি চা কিংবা মেথি বীজ চিবিয়ে খাওয়া উচিত।

কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে

মেথি মানব শরীরের মূল্যবান অর্গান কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে । নিয়মিত যদি কেই মেথি খায় তাহলে তার শরীরের পলিফেনোলিক ফ্লাভোনয়েড এর মাত্রা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। ফলে কিডনির কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। তাই কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন সকালে মেথি বীজ বেটে তার সাথে মধু মিশিয়ে খেতে হয়।

মাসিকের ব্যাথা উপশম করে

মেথির বীজ ভেজানো পানি মাসিকের ব্যথা প্রচণ্ডভাবে উপশম করে। এই ব্যথা উপশমে করতে রাতে চা চামচের দুই চামচ সকালে খালি পেটে ঐ মেথি ভেজানো পানি সেবন করলে মাসিকের ব্যাথা খুব শীঘ্রই কমে যায়। তাই যাদের মাসিকের সময় তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা করে তাদের নিয়মিত মাসিকের সময় দিনে দুইবার মেথি বীজ ভেজানো পানি পান করা উচিত।

হজম শক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

হজম শক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষেত্রে মেথির ভূমিকা অনন্য। মেথির মধ্যে বিদ্যমান ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমূহ খাদ্যকে তড়িৎগতিতে হজম করতে সহায়তা করে। ফলে শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। তাই বদহজমের ক্ষেত্রে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সকালের নিয়মিত মেথি ভেজানো পানি খাওয়া উচিত।

জ্বর সর্দি কাশি থেকে মুক্তি দেয়

অনেকের সময় অসময় জ্বর ও সর্দি কাশি হয়। আর জ্বর ও সর্দি কাশি হলেই শুরু হয়ে যায় প্যারাসিটামল ও এন্টিবায়োটিক খাওয়া। কিন্তু জ্বর ও সর্দি কাশির যদি একটু দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে একটার পর একটা ওষুধের কোম্পানি পাল্টিয়ে খাওয়া হয়। প্রাকৃতিক ভাবে কেউ জ্বর ও সর্দি কাশি সারানোর একবার চেষ্টা করে না। মেথি জ্বর সর্দি কাশির বিরুদ্ধে ফাইট করার জন্য একটি প্রচন্ড হাতিয়ার। তাই জ্বর ও সর্দি কাশি হলে ঔষদের পিছনে না দৌড়িয়ে মেথি ভেজানো পানি খাওয়া উচিত।

শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়

বিভিন্ন কারণে কিংবা বিভিন্ন খাদ্য খাওয়ার ফলে মানব শরীরে ক্ষতিকারক পদার্থ জমে যায়। এর ফলে শরীরে বিভিন্ন মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে। অথচ হাতের কাছে থাকা মেথি ভেজানো পানি নিয়মিত খেলে শরীর থেকে টক্সিন বের হয়ে যায় এবং অনেক মারাত্মক রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। তাই শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে নিয়মিত মেথি ভেজানো পানি খাওয়া উচিত।

এছাড়া মেথি শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখে, স্ট্রোক থেকে দূরে রাখে, গলা ব্যাথা ও কাশি কমায়, ফোড়া, পোড়া ও চর্মরোগ ভালো করে, রক্তে চিনির মাত্রা কমিয়ে দেয়, পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়ায়, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান করে এবং চির তারুণ্য ধরে রাখে।

পড়তে পারেনঃ

চুলের জন্য মেথির উপকারিতা

মেথি চুলের অকালপক্কতা রোধ করে, চুলের বৃদ্ধি ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে, চুল সিল্কি ও ময়েশ্চারাইজার করে, চুলের খুশকি দূর করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে। এক কথায়, চুলের যত্নে মেথি একটি প্রচন্ড গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান।

মেথি চুলের অকালপক্কতা রোধ করতে ৫০ গ্রাম নারকেল তেলের মধ্যে  চা-চামচ মেথি কমপক্ষে ৩/৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। তারপরে এই তেল কুসুম গরম করে চুলে লাগান। নিয়মিত ব্যবহার চালিয়ে যান। এই তেল ব্যবহারের ফলে অকালে আর চুল পাকবে না।

চুলের বৃদ্ধি ও নতুন চুল গজাতে ১ চা-চামচ মেথি বীজ ও ১ চা-চামচ সরিষা একসাথে মিশিয়ে পাউডার তৈরি করে নিন। এরপর ২/৩ চা-চামচ কুসুম গরম পানিতে ঐ পাউডার ২/৩ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। ২/৩ ঘণ্টা পর এর সাথে ১ চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসেজ করুন। ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এই পেস্টটি চুলের বৃদ্ধি ও নতুন চুল গজাতে প্রচন্ড কার্যকারী

চুল সিল্কি ও ময়েশ্চারাইজার করতে রাতে ২ চা-চামচ মেথি এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে চুলে শ্যাম্পু করে ঐ মেথি ভেজানো পানি দ্বারা চুল ধুয়ে ফেলুন। এটা চুলকে খুব নরম, সিল্কি ও মসরাইজার করে।

চুলের খুশকি দূর করতে ২ চা চামচ মেথি বীজ রাতে এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে পানি সহ মেথি বীজ ব্লেন্ড করে নিন। এরপর এতে ২ চামচ টক দই মিশিয়ে সমস্ত চুলে লাগান। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এভাবে ১ সপ্তাহ মেথির ব্যবহার চালিয়ে যান। ১ সপ্তাহ পরে দেখবেন চুলের সব খুশকি দূর হয়ে গেছে।

চুল পড়া বন্ধ করতে রাত্রে ২ চামচ মেথি বীজ ২৫০ গ্রাম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর সকালে পানিটুকু ছেকে খালি পেটে পান করে ফেলুন। এই পানি পান করার ফলে মেথির মধ্যে থাকা প্রোটিন ও নিকোটিনিক অ্যাসিড চুলের শক্তি যোগাবে। ফলে চুল খুব মজবুত হবে এবং চুল পড়া বন্ধ হবে।

ওজন কমাতে মেথির উপকারিতা

ওজন কমানোর জন্য মেথি একটি প্রচন্ড কার্যকারী প্রাকৃতিক উপাদান। তাই ওজন কমাতে মেথি ভেজানো পানি পান করতে পারেন কিংবা মেথি বীজ ভিজিয়ে ঐ বীজ চিবিয়ে খেতে পারেন কিংবা মেথি বীজ ভেজে ঐ বীজ পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন কিংবা মেথির সাথে মধু মিশিয়ে চা তৈরি করে খেতে পারেন কিংবা মেথি চা খেতে পারেন।

যেভাবে খান না কেন খাবেন তো মেথি। আর কমাবেন ওজন। মনে রাখবেন শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদানের চেয়ে মেথি একটি জাদুকরী উপাদান। সুতরাং নিয়মিত মেথি খান, ওজন কমান, সুস্থ থাকুন এবং আকর্ষণীয় ফিগারের অধিকারী হন।

মেথির উপকারিতা মুখের জন্য

বেশিরভাগ মানুষ মুখের ত্বক নিয়ে সমস্যায় থাকে। মুখের ত্বকের সমস্যার সমাধান করতে প্রায় সবাই বাজারের যাবতীয় ক্রিম ব্যবহার করে। কেউ কেউ হয়তোবা ভালো ফল পায় কিন্তু বেশিরভাগ কোন ফল পায় না। ফলে তারা মুখের ত্বক নিয়ে বড় হতাশায় পড়ে যায়। হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।

মেথি এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা দিয়ে যে কেউ বাড়িতে বসে মুখের ত্বক সমস্যার সমাধানের জন্য মেথি ফেস ক্রিম তৈরি করতে পারে এবং এই মেথি ফেস ক্রিম ব্যবহার করে মুখের ত্বকের যাবতীয় সমস্যার সমাধান পেতে পারে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল কিভাবে মেথি ফেস ক্রিম তৈরি করবেন। হ্যাঁ, এখন মেথি ফেস ক্রিম তৈরি করার পদ্ধতি শিখে নিন।

প্রথমে ৫০ গ্রাম মতো মেথি গুঁড়ো করে নিন। এরপর এর সাথে এক কাপ মতো পানি দিয়ে ফোটাতে থাকুন। পানির ফোটা শুরু হয়ে গেলে এর সাথে এক চিমটে হলুদ যোগ করুন। মিশ্রণটি ঘন হয়ে গেলে তাপ দেওয়া বন্ধ করুন। মিশ্রণটি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে ছেকে ফেলুন এবং এর সাথে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে নিন।

এরপর মিশ্রণটি একটা কৌটোর মধ্যে ঢুকিয়ে কৌটার মুখ বন্ধ করে ফ্রিজে রেখে দিন। তৈরি হয়ে গেল আপনার মেথি ফেস ক্রিম। এখন প্রতিদিন একবার এই মেথি ফেস ক্রিম আপনার মুখের ত্বকে ব্যবহার করুন। ব্যবহার চালিয়ে যান ১৫ দিন। ১৫ দিন পরে দেখবেন আপনার মুখের ত্বকের যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে এবং সাথে মুখের ত্বক হয়েছে অনেক উজ্জ্বল ও অনেক মোলায়েম।

ডায়াবেটিসে মেথির উপকারিতা

ডায়াবেটিকের সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে মেথির জুড়ি নেই। ডায়াবেটিসের রোগীদের প্রতিদিন দুইবার এক চামচ করে মেথি বীজ গুড়ো খাওয়া উচিত। যদি কোন ডায়াবেটিসের রোগী নিয়মিত ১৫ দিন মেথি বীজ গুড়ো খায় তাহলে তার ব্লাড সুগার কমবে ও প্রস্রাবের সুগার হ্রাস পাবে। এককথায় ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তাই নিয়মিত মেথি বীজ খান, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং ডায়াবেটিস মুক্ত থাকুন।

মেথি খাওয়ার নিয়ম

মেথি বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়।

১। প্রতিদিন রাতে এক চা চামচ মেথি বীজ একগ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করুন। এর সাথে কয়েকটি মেথি বীজ চিবিয়ে খান।

২। একটি কৌটোতে মেথি বীজ ভেজে গুড়ো করে রাখুন। সকালে এক গ্লাস পানির সাথে এক চা চামচ মেথি বীজ গুড়ো মিশিয়ে খালি পেটে পান করে ফেলুন।

৩। সাধারণ চা এর পরিবর্তে মেথির সাথে মধু মিশিয়ে চা তৈরি করে খান।

৪। এছাড়া প্রতিদিন তিন চার বার মেথি চা খান।

মোটকথা মেথি খাওয়ার জন্য আপনার পছন্দমত উপরের চারটি উপায় থেকে যেকোনো একটি উপায় বেছে নিয়ে মেথি  খাওয়া শুরু করুন এবং সুস্থ থাকুন।

মেথির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

মেথি যে উপকারী এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে সবার জন‍্য মেথি উপযুক্ত নয়। মেথির কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা আছে। মেথি খেলে গ্যাস, পেট ব্যথা ও ডায়রিয়া হতে পারে, এলার্জি বাড়ে, রক্তে পটাসিয়াম ও শর্করার মাত্রা। কমে যায়। এছাড়া মেথি ক্ষুধা কমিয়ে দেয়। তাই যাদের এসব সমস্যা আছে তারা মেথি খাবেন না।
পরিশেষে, মেথি শুধু একটি সাধারণ মসলা নয় এটি এক অনন্য প্রাকৃতিক ওষুধ! চুল ও ত্বকের যত্ন থেকে শুরু করে হজম শক্তি বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ওজন কমানো এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে মেথির অবিশ্বাস্য সব উপকারিতা আপনি জানলেন। এখন নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন, শরীরকে সুস্থ রাখুন, উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারী হন,, চুলকে শক্তিশালী ও ঘন করুন এবং তারুণ্য ধরে রাখুন। সর্বোপরি, সুস্থ, সুন্দর ও রোগমুক্ত জীবনযাপন করতে চাইলে আজ থেকেই আপনার খাদ্যতালিকায় মেথি যোগ করুন এবং উপভোগ করুন মেথির উপকারিতা সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। মেথি সম্পর্কে আপনার আর কিছু জানার থাকলে তা কমেন্টে শেয়ার করুন।

রিলেটেড পোস্টসঃ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.