Type Here to Get Search Results !

কোনো টেস্ট ছাড়াই লক্ষণ দেখে বুঝে ফেলুন আপনি গর্ভবতী কিনা!

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ,গর্ভবতী,গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়,গর্ভবতী হওয়ার ১ম সপ্তাহের লক্ষণ,প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ

বিয়ের পর মহিলাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসে। অনেক সময় নব দম্পতিরা হঠাৎ গর্ভবতী হয়ে পড়ে। কিন্তু সেটা তারা বুঝতে পারে না কারণ তারা গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ জানে না। তাদের যদি গর্ভবতী হওয়ার বিশেষ লক্ষণগুলো জানা থাকতো তাহলে তারা সহজেই বুঝতে পারতো তারা গর্ভবতী কিনা।

গর্ভবতী মহিলাদের অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়। তাই এই সময় তাদের সতর্ক থাকা উচিত। আপনি যদি একজন নববধু হন কিংবা প্রথমবার মা হতে চলেছেন এমন মহিলা হন তাহলে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে আপনার অবশ্যই ধারণা থাকা উচিত। আজকের আর্টিকেলে আমি গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। যদি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন এবং আর্টিকেলে উল্লেখিত লক্ষণগুলোর সাথে আপনার শরীরের পরিবর্তন মিলিয়ে দেখেন তাহলে কোন টেস্ট ছাড়াই আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে আপনি গর্ভবতী কিনা। এখন চলুন গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণগুলো বিস্তারিতভাবে জানি।

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ

গর্ভবতী হওয়ার উল্লেখযোগ্য কিছু লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় যে লক্ষণগুলো কারো নিশ্চিত গর্ভবতী হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এখন গর্ভবতী হওয়ার উল্লেখযোগ্য সেই লক্ষণ গুলো জেনে নিন।

১। মাসিক বন্ধ হওয়া

মহিলাদের ১২/১৩ বছরের পর থেকে শুরু করে ৫০/৫৫ বছর পর্যন্ত প্রতি মাসের একটি নির্দিষ্ট তারিখে ব্লেডিং হয় যেটা মাসিক নামে পরিচিত। কোন কারণে যদি কোন মাসে ব্লেডিং না হয় তাহলে বুঝতে হবে নিশ্চিত কোন সমস্যা আছে। আর এই সমস্যার মধ্যে বিবাহিত নারীদের জন্য খুশির সংবাদ হল গর্ভবতী হওয়ার পূর্বাভাস। মাসিক বন্ধ হওয়া মানেই ধরে নিতে হবে গর্ভবতী। সুতরাং নিয়মিত মাসিক বা ব্লেডিং বন্ধ গর্ভবতী হওয়ার অন‍্যতম লক্ষণ।

২। বমি বমি ভাব ও মাথা ঘোরা

কোন মহিলা গর্ভবতী হওয়ার এক সপ্তাহ পর থেকে তার মাঝে মধ্যে বমি বমি লাগে। সে গলা টানতে থাকে কিন্তু বমি হয় না। এই সাথে তার মাথা ঘুরাতে থাকে। অনেক সময় মাথা ঘুরাতে ঘুরাতে সে মাটিতে পড়ে যায়। এই অবস্থা কোন নববধূর মধ্যে দেখা গেলে সে নিশ্চিত গর্ভবতী।

৩। মাসিকের চেয়ে কম রক্তপাত  

মহিলাদের প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট তারিখে রক্তপাত শুরু হয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চলে। এই নিয়ম ছাড়া যদি হঠাৎ করে কারো মাসিকের চেয়ে কম রক্তপাত হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায় তাহলে মনে করতে হবে এটা মাসিকের রক্তপাত না। এই রক্তপাত গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ।

৪। স্তনের পরিবর্তন 

স্তনের আকার পরিবর্তন গর্ভবতী হওয়ার একটি অন‍্যতম লক্ষণ। কোন মহিলা গর্ভবতী হলে তার স্তনে প্রথম দিকে ব‍্যথা হয়। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে স্তনের সাইজ ও বোটা বড় হয়। এছাড়া স্তনের বোটা চাপ দিলে এক ধরনের রস নিসৃত হয়। মূলত গর্ভবতী হলে হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। আর হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সাথে সাথে স্তনের পরিবর্তন দেখা যায়। এই অবস্থা কারো মধ্যে দেখা গেলে সে গর্ভবতী বলে ধরে নিতে হবে।

৫। খাবারের প্রতি অনীহা 

কোন মহিলা গর্ভবতী হলেই শুরু হয়ে যায় খাবারের প্রতি অনীহা। যেসব খাবার আগে প্রচুর পরিমাণে খেত সেসব খাবার এখন আর খেতে চায় না। এককথায় গর্ভবতী হওয়ার পর মুখের রুচি নষ্ট হয়ে যায়। খাবার সামনে আনলেই সে বলতে শুরু করে, সরাও গন্ধ, সরাও গন্ধ। কোন খাদ্যই যেন তার কাছে ভালো লাগে না। এই লক্ষণ কারো মধ্যে দেখা গেলে সে অবশ্যই গর্ভবতী।  

৬। মর্নিং সিকনেস 

ক্লান্তি লাগা গর্ভবতী হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। দিনের যেকোনো সময় হঠাৎ হঠাৎ ক্লান্তি লাগতে পারে। আর এই ক্লান্তির মাত্রা ধীরে ধীরে খুব বেড়ে যায়। বিশেষভাবে সকালে ঘুম থেকে উঠার পর বেশী ক্লান্তিবোধ মনে হয়। এই অবস্থায় গর্ভবতী মহিলারা খুব অস্বস্তি অনুভব করে। গর্ভবতী হওয়ার এক মাস পর থেকে এই লক্ষণ দেখা যায়। আর এরপর শুরু হয় বমি।

৭। ঘন ঘন প্রস্রাব লাগা 

গর্ভবতী মহিলার হরমোনের পরিবর্তন হয় যার ফলে শরীরে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং বিশেষভাবে কিডনি থলিতে রক্ত প্রবাহের মাত্রা অনেক গুণ বেড়ে যায়। এর জন্য মূত্রথলি খুব দ্রুত পূর্ণ হয়ে যার। আর এর কারণে গর্ভবতী মহিলার ঘন ঘন প্রস্লাব লাগে। এই অবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের এমন হয় যেন মনে হয় তারা ডায়াবেটিস রোগীদিন যত যায় তত এ সমস্যাটি প্রকট হতে থাকে।

৮। মেজাজ পরিবর্তন

হরমোনের পরিবর্তনেল কারণে গর্ভবতী মহিলার মেজাজে পরিবর্তন হয়। কোন কোন সময় সে ভাল কথা বলে ও হাসিখুশি থাকে। আবার কোন কোন সময় অকারণে মন খারাপ করে বসে থাকে ও হঠাৎ করে রেগে যায়‌। আসলে এসময় মহিলাদের হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারের পরিবর্তন হয় যার ফলে গর্ভবতী মহিলাদের এক এক সময় এক এক রকম মেজাজ দেখা যায়।

৯। শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি 

গর্ভবতী মহিলার স্বাভাবিক এর তুলনায় শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে। যদি কোন মহিলার একটানা ১৮ দিন স্বাভাবিক এর চেয়ে তাপমাত্রা বেশি থাকে তাহলে ঐ মহিলা নিশ্চিত গর্ভবতী বলে ধরে নেওয়ার হয়।

১০। রুচি পরিবর্তন 

গর্ভবতী মহিলার উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হল তার রুচির পরিবর্তন। কোন মহিলা গর্ভবতী হলে সে জীবনে যা খেতে পছন্দ করে না তাই বেশি খায়। আবার যা সব সময় খেতে পছন্দ করে তা খায় না। মহিলাদের এই অবস্থাটা কিন্তু গর্ভবতী হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

পড়তে পারেনঃ

গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহের লক্ষণ

গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু লক্ষণ দেখা যায় যে লক্ষণ গুলো ১০০% গর্ভবতী হওয়ার ইঙ্গিত নির্দেশ করে। এখন সেই উল্লেখযোগ্য গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহের লক্ষণ দেখে নিন।

সবকিছুতে গন্ধ অনুভূত হওয়া।

মুখের রুচির পরিবর্তন হওয়া।

বমি বমি লাগা।

মাথা ঘোরা।

ঘন ঘন প্রসাব লাগা।

স্তন ব্যথা হয়।

ক্লান্তি লাগা।

ত্বকের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পাওয়া।

সহবাসের কতদিন পর গর্ভবতী হয়

সাধারণত সহবাসের পর শুক্রাণু ও ডিম্বাণু মিলিত হয়ে জায়গোট তৈরি করলেই কোন মহিলা গর্ভবতী হয়ে যায়। তবে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৪-২১ দিন সময় লাগতে পারে। কারো প্রথম সপ্তাহে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়কারো দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রকাশ পায়। আবার কারো তৃতীয় সপ্তাহে প্রকাশ পায়।

গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়

বেশিরভাগ সময় কোন মহিলা গর্ভবতী হওয়ার এক মাস পর থোকে বমির সমস্যা শুরু হয়। এই অবস্থায় গর্ভবতী মহিলা খুব অস্বস্তি অনুভব করে। আসলে এ সময় গর্ভবতী মহিলার অ্যাস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনোর স্তর বেড়ে যাওয়া সকালে ঘুম থেকে উঠেই গর্ভবতী মহিলা বমি করতে শুরু করে। বমি শুধুমাত্র সকালে নয়, দিনের যেকোন সময় বমি হতে পারে। কারো কারো দেঢ় মাস পরেও বমির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের সতর্কতা

যখন কোন মহিলা জানতে পারবে যে সে গর্ভবতী তখন তিন মাস পর্যন্ত তার প্রচন্ড সর্তক থাকতে হবে। এখন জেনে নিন তিন মাস পর্যন্ত কিভাবে সর্তক থাকবেন।

ধুমপান, এলকোহল ও ক‍্যাফেইন থেকে দূ্রে থাকুন।

একজন ডাক্তার নির্বাচন করুন এবং তার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন।

সবসময় বাড়িতে থাকার চেষ্টা করুন এবং বিনা প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া বন্ধ করুন।

উপরের লক্ষণগুলো দেখা গেলে ভয় পাবেন না বরং মানিয়ে নিন।

স্বামীর সাথে সময় কাটান এবং তাকে মানিয়ে নিন।

বাচ্চার পুষ্টির কথা চিন্তা করে বেশি বেশি ফলমূল ও সামদ্রিক মাছ খান।

কোন প্রকার ভারি কাজ করবেন না।

ঘুমের মাত্রা বাড়িয়ে দিন।

গর্ভবতী মায়ের পাঁচটি বিপদ চিহ্ন

গর্ভবতী মায়ের ৫টি বিপদ চিহ্ন দেখা গেলে না ঘাবড়িয়ে পরিবারের সবাই মিলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে মোকাবেলা করা উচিৎ। এখন গর্ভবতী মায়ের সেই পাচটি বিপদ চিহ্ন দেখে নিন।

খিচুনি হওয়া।

বিলম্বে প্রস্রাব হওয়া।

হঠাৎ প্রচুর ব্লেডিং হওয়া।

প্রচন্ড জ্বর হওয়া।

তীর্ব মাথা ব‍্যাথা সহ চোখে ঝাপসা দেখা।

গর্ভবতী হওয়ার পর কি মাসিক হয়?

গর্ভবতী হওয়ার পর অনেকের ব্লেডিং হয় কিন্তু সেই ব্লেডিং মাসিকের মত দীর্ঘস্থায়ী নয় কিংবা মাসিকের মত ব্লেডিং এর মাত্রা বেশি নয়‌। এ সময় অল্প পরিমাণে ব্লেডিং হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যে সেরে যায়। এই ব্লেডিংকে কখনও মাসিক বলা যাবে না, জাস্ট এটা এক ধরনের রক্তক্ষরণ।

পরিশেষে বলা যায় যে প্রত্যেক নববধূই একদিন মা হবে। সেটা আজ হোক কিংবা কিছুদিন পরে হোক। আর মা হওয়ার প্রথম পদক্ষেপ হল গর্ভবতী হওয়া। তাই বিয়ের আগে বা পরে সব মহিলার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ গুলো সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত। যাইহোক, একজন নববধূ হিসাবে যদি আপনার মধ্যে উপরের কোন লক্ষণ দেখা যায় তাহলে আপনি নিশ্চিত যে আপনি গর্ভবতী। তবে আপনার সন্দেহ পুরোপুরি দূর করার জন্য গর্ভবতী স্টিক দিয়ে টেস্ট করতে পারেন।

রিলেটেড পোস্টসঃ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.